মায়া - পর্ব ১২ ও ১৩ - ভয়ংকর ভূতের গল্প

মায়া
লেখিকা: মৌসুমী আক্তার
পর্ব ১২ ও ১৩ (শেষ পর্ব)


পর্ব ১২

নিজের বাবার এমন ভয়াবহ মৃত্যু দেখে তাসনিম চমকে যায়।মায়া কেনো তার বাবাকে এভাবে মারলো
।তাসনিমের বাবার নিথর দেহ টা পড়ে আছে মাটিতে।তাসনিমের বাবার মুখ মায়ার মতো নীল হয়ে আছে।যেনো হুবহু সেইম বিষক্রিয়ায় মারা গেছে।তাসনিম জানতেও পারলো না সেই রহস্য।যে রহস্যর জন্য মারা গেলো তার বাবা।তার বাবার মরা দেহর পাশে পড়ে আছে একটা পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট।এই পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট আর মায়ার রিপোর্ট হুবহু সেইম।গভীর কোনো যোগসূত্র আছে এই মৃত্যুর পেছনে।
বাবাকে হারিয়ে তাসনিমের জীবনে এক গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।বাবার মৃত্যুর বেশ কয়েকদিন হয়ে গিয়েছে।এখন হসপিটালের পুরা দায়িত্ব টা তাসনিমের উপোর এসে পড়েছে।তাসনিম হসপিটালের ফাইল গুলা চেক করতে গিয়ে দেখে সব কিছুই অপর্ণা মায়ার নামে।কোনো কিছুই তার বাবার নামে নয়।তার বাবার নামে কিছু না হলে এই সম্পত্তির মালিক তার বাবা কিভাবে হলো।এটা এক প্রকার জোর জবরদস্তি অন্যর সম্পত্তি ভোগ করা।
তাসনিম কিভাবে খুজে বের করবে অতীতের সেই রহস্য।এইদিকে আবরার বেশ কয়েকদিন নিঁখোজ।আবরার কোনো সত্যির মুখোমুখি হতে চাচ্ছে না।
রাতে সুয়ে আছে তাসনিম একা একা ই চিন্তা করছে কি করবে সে।
কোনো কিছুর উপায় না পেয়ে মায়াকে ডাকে।তাসনিম কাঁন্নাভেজা কন্ঠে মায়ার কাছে সাহায্য চাই।
মায়া প্লিজ হেল্প মি।এই জীবন টা আমি আর চাচ্ছিনা মায়া।আমি হাঁপিয়ে উঠেছি।সত্যর পিছু পিছু দৌড়ে আমি ক্লান্ত। আমাকে প্লিজ এবার বলো মায়া।আমি আর পারছি না।আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু তোমার মৃত্যুর কারণ আমি খুজে পাই নি মায়া।একমাত্র তুমি পারো আমাকে সব সত্য খুলে বলতে।এমন সময় তাসনিম দের বাগান থেকে একটা করূণ কাঁন্নার আওয়াজ ভেসে আসে।তাসনিম খেয়াল করে শুনতে পায় কেউ কাঁদছে।গভীর রাতে কাঁন্নার আওয়াজ টা যেনো আরো বেশী তীব্র শোনা যাচ্ছে।তাসনিম ধীরে ধীরে ধীরে উঠে বাগানের দিকে যায়। কাঁন্নাটা কোন জায়গা থেকে আসছে তাসনিম বুঝতে পারছে না কিন্তু এই বাগানেই সেটা বুঝতে পারছে।
রাত প্রায় ১২ টা বাজে,,,,,
হঠাত তাসনিম খেয়াল করে একটা জায়গা ১০৩ লেখা। ১০৩ দেখেই তাসনিম বুঝতে পারে ১০৩ মানেই মায়ার সিরিয়াল নাম্বার।তাসনিম এগিয়ে গিয়ে সেখানে কান পেতে শোনে কাঁন্না টা ওখান থেকেই আসছে।
তাসনিম বাগান থেকে একটা কোদাল নিয়ে ওখানে খুড়তে শুরু করে।তাসনিম কিছুটা খোড়ার পর দেখতে পায় ইট,বালি,সিমেন্ট এর প্রলেপ।তাসনিম অনেক কষ্টে ইট,বালি,সিমেন্ট এর প্রলেপ সরায় আর তারপর সে একটা গর্ত দেখতে পায়।সে গর্তে ঘুমন্ত অবস্থায় সুয়ে আছে মায়া।
মায়াকে দেখেই চমকে ওঠে তাসনিম।আর ছুটে পালানোর চেষ্টা করে হঠাত এমন ভাবে মায়াকে দেখে ভয় পেয়ে যায় তাসনিম। সাথে সাথে মায়া তাসনিমের হাত টেনে ধরে।তাসনিম চোখ বন্ধ করে একটা চিৎকার দেই প্লিজ ছাড়ো আমায়।ভয়ে তাসনিম রাকরুদ্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। এমন সময় মায়া বলে ভয় পেও না তাসনিম।আমি মায়া।
তাসনিমের মন প্রাণ যেনো শীতল হয়ে গেলো।নিমিষেই তাসনিমের মনের সব ভয় দূর হয়ে গেলো।মায়ার ভয়েজ টা এত মিষ্টি।মায়ার ভয় পেওনা কথাটার মাঝে এক চরম তৃপ্তি ছিলো।মায়া তাসনিমের হাত টাও ছেড়ে দেই।
তাসনিম এর হার্টবিট অনেক দ্রুত রেসপন্স করছিলো।একটা মৃত মানুষ কথা বলছে তার সাথে।অন্য সব মৃত মানুষ দের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এ মানুষ।
এমন সময় মায়া বলে ওঠে,,
কি ভাবছো তাসনিম।আমি এই বাগানে কেনো?এখানে সুয়ে আছি কেনো?এখানে আমাকে কবর দেওয়া হয়েছিলো তাসনিম।এটা আমার কবর।চার বছর ধরে আমি এখানেই সুয়ে আছি।
তাসনিম কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে কে তোমাকে এখানে কবর দিয়েছিলো মায়া।
মায়া বলে তুমি শুনলে সহ্য করতে পারবে না।
আমাকে এখন সব ই সহ্য করতে হবে। তুমি বলো আমায় মায়া।
মায়া বলে তোমার বাবা।
নিজের বাবার নাম টা শুনতে হবে তাসনিম কল্পনাও করতে পারে নি।এই পৃথিবীতে তার জীবনের একমাত্র আদর্শ তার বাবা।বাবার হাত ধরেই সব আদর্শের শিক্ষা পেয়েছে সে।আর আজ এতদিন ধরে যে খুনি কে খুজছে সে আর কেউ নয় তার বাবা।এমন কথা শোনার আগে তার মৃত্যু ও ভাল ছিলো।কখনো কখনো সত্য এতটাই ভায়বহ হতে পারে তা তাসনিমের জানা ছিলো না।
তাসনিম এর সমস্ত শরীরে কোনো বল নেই।তবুও প্রশ্ন করলো আমার বাবা কিন্তু কেনো?
তোমার বাবা আর আবরার মিলে আমার পুরা জীবন টা শেষ করে দিয়েছে।
তাসনিমের দু'চোখ ছল ছল করে ওঠে।এমন ভয়ানক কঠিন সত্যর মুখোমুখি কোনদিন হতে হবে ভাবতে পারে নি তাসনিম।নিজের স্বামি আর নিজের বাবা।এই দুইটা পুরুষ ই একটা মেয়ের জীবনের সব থাকে।
মায়া তাসনিম কে বলতে শুরু করে,,
এই হসপিটালের মালিক ছিলেন আমার বাবা।বাবা তার সব সম্পত্তি আমার নামে করে দিয়েছিলেন।তোমার বাবা আর আমার বাবা দুই বন্ধু ছিলেন।আমি আর আমার বাবা আর আমার স্বামি মিলে হসপিটাল টা চালাতাম।
রাতুল এর সাথে সম্পর্ক করে আমার বিয়ে হয়েছিলো।অনেক বেশী ভালবাসতাম আমি রাতুল কে।আমার নিজের থেকেও বেশী।কিন্তু রাতুল এর ফ্যামিলি সেই ভালবাসা মেনে নেই নি।রাতুল এর বড় ভাই মৃদুল তো মোটেও মেনে নিয়েছিলো না।
সেদিন মৃদুল কে আমি মারি নি তাসনিম।আমি জানতাম মৃদুল রাতুল এর ভাই তাই আমি মৃদুল এর কাছে সাহায্য চাইছিলাম প্রথমে।এই জন্য অনেক দিন ধরে আমি মৃদুল এর সামনে দেখা দিতাম।
মৃদুল কে আমি ঠিকানা দিয়েছিলাম।যাতে মৃদুল সেখানে গিয়ে ওর ভাই এর সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা জানতে পারে।মৃদুল ঠিক ভাবেই এগোচ্ছিলো।ও আমার দেওয়া ঠিকানায় চলে গেছিলো।সেখানে ওর ভাই এর আত্মার সাথে দেখা ও হয়।মৃদুল সেদিন পুরাটা জানতে পারে ওর ভাই কিভাবে মারা যায়।তখন মৃদুল সাথে সাথে তোমার বাবা কে ফোন করে হুমকি দেই যে সে সব জেনে গিয়েছে।সে তুমি বা পুলিশ কে সব বলে দিবে।
সেদিন তোমার বাবা মৃদুল কে বলে সে পুলিশ কে সব টা বলার আগে তার সাথে যেনো দেখা করে।তোমার বাবা আর আবরার দুজনে মিলে মৃদুল এর বাসায় অপেক্ষা করে কখন মৃদুল ফিরবে।মৃদুল সেদিন বাসায় ফিরলে তোমার বাবা আর আবরার মিলে এক ভয়ানক বিষ ওকে খাইয়ে দেই।আর সেদিন আমি চেষ্টা করেছিলাম হসপিটালে নিয়ে মৃদুল কে বাঁচাতে।কিন্তু পারিনি সেদিন আবার জয়ী হয় শয়তানের।মৃদুল নিজেকে অপরাধী মনে করে। মৃদুল মনে করে ও যদি ওর ভাই এর ভালবাসা মেনে নিতো তাহলে আজ এভাবে ওর ভাই কে হারাতো হতো না।
তাসনিম এর দু'চোখ বেয়ে পানি পড়ছে সে মৃদুল কে কত ভুল বুঝেছে।কত গালি দিয়েছে।
তাসনিম আবার ও প্রশ্ন করে কিন্তু তোমার মৃত্যু সেটা কিভাবে হয়েছিলো মায়া।
মায়া তখন হুহু করে কেঁদে দিয়ে বলে তাহলে শোনো।
আমি আর রাতুল অনেক সুখে সংসার করছিলাম।৫ বছরের ভালবাসা দুই পরিবারের কেউ মেনে নেই নি।রাতুল তো নিজের ফ্যামিলি ছেড়েও চলে আসলো।একটা সময় বাবা আমাদের ভালবাসা মেনে নিলো।বিয়ের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আমি প্রেগন্যান্ট হই।আমার কোল জুড়ে আসে ছোট্ট তুসু।অনেক কম বয়সে বিয়ে হয়েছিলো আমার।আমার মেয়ের বয়স যখন ৩ বছর তখন ঘটে আমার জীবনের সব থেকে খারাপ ঘটনা।

পর্ব ১৩ এবং শেষ

আমি রাতুল আর তুসু রোজ গাড়িতে করে হসপিটালে আসতাম।আমার ছোট্ট মেয়েটা রাতুল কে বাবাই বলে ডাকতো।পুরা হসপিটাল জুড়ে খেলা করে বেড়াতো।পুরা হসপিটাল টা মাতিয়ে রাখতো।সবার কোলে কোলে থাকতো।আমার বাবা একজন শিল্পপতি ছিলেন।আমার মা রাজরাণীর মতো থাকতেন।একদিন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিলো গাড়িতে তুসু ঘুমিয়ে পড়েছিলো রাত প্রায় বারো টা হবে।বৃষ্টির মাঝে হঠাত গাড়িটা নষ্ট হয়ে যায়।রাতুন রেইন কোট টা নিয়ে গাড়িটা ঠিক করার চেষ্টা চালাচ্ছিলো।এমন সময় কয়েকজন গুন্ডা এসে রাতুল এর গলায় ছুরি ধরে।ওরা গাড়ি থেকে তুসু কে নামিয়ে বলে তুসু কেও মেরে ফেলবে।আমি একটা মেয়ে মাঝরাতে নিজের সন্তান আর নিজের স্বামির এমন বিপদ দেখে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলাম।কোথাও কেউ ছিলো না।নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছিলো।ওরা রাতুল এর গলায় একটা পোচ দিয়ে দেই সাথে সাথে রক্ত গড়িয়ে পড়ে।ওরা সেদিন একটা নির্দোষ মানুষ কে জঘন্য ভাবে মেরেছিলো।
আমি বার বার বলেছিলাম প্লিজ রাতুল কে মেরো না কি চাও আমি দিচ্ছি।আমি রাতুল কে ভীষণ ভালবাসি।আমার মেয়ে ওর বাবাই ছাড়া থাকতে পারবে না।কেনো মারছো তোমরা।ঠিক তখন আবরার এসে হাজির হয় আমার সামনে।এর আগে পরে আমি কোনদিন আবরার কে দেখি নি।আবরার আমাকে বলে তাকে বিয়ে করতে হবে।তুমি বলো তাসনিম নিজের ভালবাসার মানুষ কে ছেড়ে একটা অপরিচিত মানুষ কে কিভাবে বিয়ে করা সম্ভব।রাতুল বলে আমাকে মেরে ফেলুক তবুও তুমি রাজি হইও না মায়া।তখন ওরা তুসুর গলায় ছুরি ধরে বলে বিয়ে না করলে তুসু কে মেরে ফেলবে।তখন রাতুল আমাকে বলে প্লিজ মায়া তুমি ওকে বিয়ে করে নাও।আমার মেয়েকে বাঁচাও মায়া।নিজের স্ত্রী কে অন্যকে বিয়ে করতে বলা অসহায় স্বামি জানে এ কষ্ট কত যন্ত্রণার।নিজের মেয়ে আর স্বামির প্রাণ বাঁচাতে সেদিন আমি আবরার কে বিয়ে করেছিলাম।আমার মৃত্যুর পর আমার সব সম্পত্তি আমার স্বামির হবে তাই আবরার আমাকে বিয়ে করে।সেই রাতেই আবরারের সাথে আমার বিয়ে হয়।আমাকে জোর জবরদস্তি বিয়ে করে ওরা রাতুল কে মেরে ফেলে।নিজের প্রাণের থেকে প্রিয় রক্তাক্ত স্বামিকে সেদিন দেখে পাগলের মতো ছটফট করেছিলাম কিন্তু কারো কাছে কোনো সাহায্য পাই নি।এই সব কিছুর মাস্টার প্লান ছিলো তোমার বাবা।মামা আর ভাগ্নে মিলে সেদিন সম্পত্তির লোভে আমার ভালবাসা কে মেরে ফেলেছিলো।আমি বার বার বলেছিলাম তোমরা সব নিয়ে নাও তবুও আমার পরিবার কে মেরো না।
ওরা শুধু এটুকু করে থেমে থাকে নি।দিনের পর দিন আমার মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আমাকে ভোগ করেছে আবরার।নিজের শরীরের উপর ঘেন্না লাগতো আমার।শুধু মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে সব মেনে নিতাম।আমার মা বাবাকে ওরা আমাকে মেরে ফেলার ভয় দিতো।আমার মা বাবা ভয়ে কাউকে কিছু বলতো না।মানুষকে এটাই বললো আমাদের সব কিছু তোমার বাবার কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।
এরপর তোমার বাবা আবরারের সাথে তোমার বিয়ে দিতে চাইলেন।তখন মৃদুল এর সাথে তোমার ভালবাসার কথা জেনে যান তোমার বাবা।ওই সময়ে আমিও প্রেগন্যান্ট হয়ে যায়।আবরারের সন্তান আমার পেটে।সন্তান জন্ম দিলে তোমার সাথে বিয়ে দিতে পারবে না।অনেক মানুষ অনেক ধরনের প্রশ্ন করবে তাই ঝামেলা এড়াতে একদিন ওরা ল্যাব থেকে বিষাক্ত বিষ আমার মেয়েকে খাইয়ে দেই।আমার মেয়েটা ছটফট করতে করতে মারা যায়।
আমাকেও ওই বিষ খাইয়ে দেই ওরা।কিন্তু বিষে আমার মৃত্যু না হলে ওরা মিথ্যা বলে সবাই কে আমি আর আমার মেয়ে সুইসাইড করেছি।
জীবন্ত আমার উপর অস্ত্রোপচার শুরু করে ওরা।প্রেগন্যান্ট অবস্থায় ভয়ানক যন্ত্রণা দিয়ে তোমার বাবা আর আবরার আমাকে মেরেছিলো।ওদের সঙ্গ দিয়েছিলো আলিয়া।আমি বার বার বলেছিলাম আমাকে এত কষ্ট দিয়ে মেরো না।আমাকে যে বিষ দিয়েছো তাতে এমনি আমি মারা যাবো।কিন্তু ওরা আমাকে ছাড়ে নি।সেদিন আমি বলেছিলাম আমি মায়া আমার মেয়ের জন্ম হবে সে ও মায়া হয়েই জন্ম নিবে।আমার মেয়ে জন্ম নিয়েছিলো তবে অতৃপ্ত আত্মা হয়ে।
আরেক টা মায়ার জন্ম হয়েছিলো কেউ জানতেও পারে নি।সেদিন রাতের সেই সন্ত্রাসীদের আমার মেয়ে মেরেছিল।কাউকে ছাড়ে নি।
আমার আত্মা অতৃপ্ত থেকে যায়।কারণ এই দুনিয়াকে জানানোর ছিলো কত বড় অন্যায় আমার সাথে হয়েছিলো।আমার সংসার ভালবাসা সব কেড়ে নিয়েছিলো তোমার আপনজনেরা।আমি চাইলেই তোমাকে মারতে পারতাম আমি মারি নি।কারণ তুমি যে মৃদুল এর ভালবাসা।আমি আবরার কে মারি নি এইজন্য ওকে বাঁচিয়ে রেখে সারাক্ষণ মৃত্যুর ভয় দিতে চাই।
তাসনিম হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে মায়ার জীবনের এমন করূণ পরিণতির কথা শুনে।
একটা মেয়ে হিসাবে তাসনিম সহ্য করতে পারছিলো না।সেদিন কত বেশী যন্ত্রণা হয়েছিলো মায়ার জীবীত অবস্থায় অস্ত্রোপচার এ।
নিজের ভালবাসার মানুষ মৃদুল কে হারিয়েছে।
নিজের স্বামি বিশ্বাসঘাতক ক্রিমিনাল।
নিজের বাবা একজন ক্রিমিনাল।
তাসনিমের পুরা জীবন টা এলোমেলো হয়ে গেলো।বুকের মাঝে তোলপাড় করছে তাসনিমের।শুধু বার বার মনে হচ্ছে আজ যদি মায়ার সংসার টা সে আবার জুড়ে দিতে পারতো।
মায়া তাসনিম কে বলে আমি আর কোনদিন আসবো না তাসনিম।আমার মা বাবার কেউ নেই।ওদের তুমি দেখো তাসনিম।
মায়া মিলিয়ে গেলো কোথায় যেনো।
তাসনিম হসপিটালের নাম টা চেঞ্জ করে আবার মায়ার নাম দিয়ে দিলো।
মায়ার মা বাবাকে তাসনিম নিজের মা বাবা ডাকলো।মায়ার বাবা কে তাসনিম বাবা ডাকে এখন।মৃদুল এর মা বাবাকে নিজের কাছে এনে রেখেছে।
আবরার আর আলিয়াকে পুলিশে ধরিয়ে দেই।
আবরার এর গালে কয়েক টা থাপ্পড় মেরে বলে তুই বেঁচে থাক মায়ার আত্মার ভয়ে সারাক্ষণ মৃত্যু যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে থাক।
তাসনিম এর আজ চার জন মা বাবা।তাদের ই দেখাশুনা করে।কেটে গেছে অনেক গুলা বছর আজ ও তাসনিম স্বাভাবিক জীবন পাই নি।তার চারদিকে অতীতেত কালো ছায়া ঘিরে রেখেছে।
মায়া প্রায় স্বপ্নতে আসে।আর তাসনিম কে বলে আমি বেঁচে আছি তোমার মাঝে।ভুলে যাও ওই অতীত জীবন টা নতুন ভাবে শুরু করো।কিন্তু চাইলেই কি সব নতুন করে শুরু করা যায়।
আবরার আজ মানসিক রুগি।মৃত্যুর ভয়ে ভারসম্য হারিয়ে ফেলেছে।
মায়ার অতৃপ্ত আত্মা আজ মুক্তি পেয়ে গিয়েছে।
সমাপ্ত।

© bnbooks.blogspot.com

Bnbooks is one of the largest archieve storage of pdf books, Bengali story, Bangla Kobita, Lyrics and all Kinds of Literature. Tags: Free Bangla pdf books download, Bangla Kobita, Technology News, Song Lyrics.